Tuesday, May 23, 2017

ভাল জেশ্চার = রিলিফ

আঁকাআঁকির শুরু থেকেই বড় একটা প্রবলেম, এখনো প্রবলেম হচ্ছে জেশ্চার বা ভঙ্গিমা । অফিশিয়াল বা প্র্যাকটিস পারপাসে অনেক আঁকা হয় কিন্তু অনেক সময় কাজ শেষে দেখা যায় রিদম টা মিসিং! আর রং স্টাইল সব দারুণ হলেও রিদম না থাকার কারনে আঁকা মার খেয়ে যায়। অনেক দিন হবেনা আসলে, ধরতে গেলে আঁকাআঁকির শুরু থেকেই জেশ্চার নিয়ে প্রবলেমে আছি আমি। আঁকতে গেলে প্রায় সময়ই রেফারেন্স প্রয়োজন হয়। যেটা হয়েছে মাথার ভেতর প্রচুর পরিমানে ভঙ্গিমার লাইব্রেরি না থাকার কারনে।
গেল বছর ডিসেম্বরে পাঞ্জেরী পাবলিকেশনের জন্য কমিক্স আঁকতে গিয়ে প্রবলেমটা বেশি ফীল করতে থাকি। যদিওবা বাচ্চাদের কমিক্স ছিল বলে কাটিয়ে দিতে পেরেছি। একদিন স্টুডিওতে মেহেদী ভাই আমাদের বললেন, কমিক্স করার জন্য ঢাকা কমিক্সের জন্য। একটু সিরিয়াস ধরনের। এবং ওটাতে হাত দিতে গিয়েই টের পেলাম জেশ্চার এর প্রবলেমকে পাশ কাটিয়ে চলার মজা ! এমনিতে নর্মাল কার্টুন আঁকতে গেলে ঝামেলা হয়না। কিন্তু কমিক্সে এক পেজেই অনেক প্যানেল। শয়ে শয়ে আঁকা । মাথার ভেতর জেশ্চারের লাইব্রেরি না থাকার কারনে প্রতিটি আঁকা আঁকতে গিয়ে পারফেক্ট রেফারেন্স খুঁজতে গেলে আর আঁকা হবেনা! এরপর থেকে হতাশা ভর করল। আমি মাহাতাব আমরা না এঁকে বসে থাকলাম। অন্যান্য কাজ করে ফেলছি কিন্তু কমিক্সে হাত দিতে গেলেই আমরা জম্বি হয়ে যাই। গোল হচ্ছে কমিক আর্টিস্ট হওয়া কিন্তু কিচ্ছু হচ্ছেনা। সব মিলিয়ে গত মাস থেকে চরম হতাশা আর কনফিউশনে ছিলাম। রাগ লাগতো খুব... নিজের উপর, সিদ্ধান্তের উপর, সবকিছুর উপর।
এরপর গত দু তিন সপ্তাহ থেকে আসিফ ভাইয়ের লাইন ইন্সট্রাকশন আর মেহেদী ভাইয়ের পেলভিস-টরসো [প্র্যাকটিস টেকনিক কম্বাইন করে নিজে একটা স্টাইল ডেভেলপ করলাম জেশ্চার আঁকার। এরর অ্যান্ড ট্রায়াল পদ্ধতি মনে করে ঐ স্টাইলে পাগলের মতো প্রতিদিন ২০- ৩০-৪০ টা করে টাইমড জেশ্চার প্র্যাকটিস শুরু করলাম। পাতার পর পাতা আঁকতে গিয়ে স্কেচবুক ফেলে A4 পেপারের রিম নিয়ে এসে চারকোল পেনসিল আর লিভো কালার পেনসিল দিয়ে আঁকতে থাকলাম একের পর এক ফিগার। কিছুদিন পর টের পেলাম নাহ্‌ মনে হয় কিছু একটা হচ্ছে। চরম হতাশার দিনেও জেশ্চার আঁকা ছাড়লাম না। দিনের পর দিন আঁকতে থাকলাম। প্রতিদিন আঁকতে আঁকতে অভ্যাস হয়ে গেলো ব্যাপারটা। ইদানীং আমার ডেইলি To-Do লিস্টের প্রথমেই থাকে জেশ্চার ড্রয়িং!
মাঝে মন খারাপ থাকায় স্টুডিওতেও যাইনি বেশ কদিন। কি মিজারেবল কিছু সপ্তাহ যে পার করেছি! প্রতি রাতে ঘুমাতে গেলে শুয়ে শুয়ে ভাবতাম, ধুর বাল এইসব করবোনা আর। যাই বাপের কথা মেনে কোন ইঞ্জিনিয়ারিং জবে ঢুকে পড়ি। থ্যাংকস গড, দিনগুলির অবসান হচ্ছে আস্তেধিরে।

ইদানীং আসিফ ভাইয়ের সাথে কলাব করে ফ্রিল্যান্স কাজ শুরু করেছি। ফ্রিল্যান্স সাইট ফাইভারে দুজনে মিলে একটা কাজ করে কমপ্লিট করলাম গতরাতে। অ্যান্ড বুমমম! ওভারল ফাইভ স্টার রেটিং। এ কাজের জন্য পরশু স্টুডিওতে গিয়েছিলাম। আঁকা কিছু জেশ্চার নিয়ে গেলাম। প্রায় দুই তিনশ ফিগার। আসিফ ভাইকে দেখালাম। আসিফ ভাই দেখে বললেন আররি, জোশ হইসে তো! দারুণ ইম্প্রোভ করসো। করো করো। রিদম ঠিক আছে। এরপর কিছু কারেকশন আর হাতের রিদম দেখিয়ে দিলেন। আড্ডাইলাম, চা খেলাম এরপর চলে এলাম। গতকাল গেলাম আবার। মেহেদী ভাই ছিলেন। ছোটকাকু কমিক্সের কাজটার ব্যাপারে কথা বললাম। দেখি মনে হয় ওটা করতে পারি।
লাইফ ইজ বিয়িং সুন্দর এগেইন। মেবি... 

No comments:

Post a Comment